এসিসিএ কী
‘অ্যাসোসিয়েশন অব চার্টার্ড সার্টিফায়েড অ্যাকাউন্ট্যান্টস’–এর সংক্ষিপ্ত রূপ হলো এসিসিএ। এটি একটি যুক্তরাজ্যভিত্তিক পেশাদারি প্রতিষ্ঠান, যা ১৯০৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।
ফিন্যান্স ও অ্যাকাউন্ট্যান্সি খাতে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতে বিশ্বব্যাপী কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি। এসিসিএ বাংলাদেশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের ১৮০টি দেশে সব মিলিয়ে ২ লাখ ৮ হাজার এসিসিএর সদস্য আছেন। শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৫ লাখ ৮৩ হাজার। বাংলাদেশেও এসিসিএর ৩০০–র বেশি সদস্য এবং ৫০০০ শিক্ষার্থী আছেন।
স্নাতক বা স্নাতকোত্তরের মতো এসিসিএ কোনো একাডেমিক ডিগ্রি নয়। এটি একটি পেশাগত দক্ষতার সনদ। এ লেভেল কিংবা উচ্চমাধ্যমিক পাস করে বছরের যেকোনো সময় একজন শিক্ষার্থী ফাউন্ডেশন ডিপ্লোমার মাধ্যমে এসিসিএ শুরু করতে পারেন।
অনেক পেশাজীবী কর্মজীবনের পাশাপাশিও বাড়তি দক্ষতা অর্জনের জন্য এসিসিএ করেন। স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি থাকলে ফাউন্ডেশন ডিপ্লোমা ছাড়াই সরাসরি এসিসিএতে ভর্তি হওয়া যায়। বিশ্বের অনেক দেশে এটি স্বীকৃত ও গ্রহণযোগ্য একটি পেশাগত দক্ষতার সনদ।
বিশেষ করে হিসাববিজ্ঞান, ফিন্যান্স বা ব্যবস্থাপনা খাতে যাঁরা সফল ক্যারিয়ার গড়তে চান, তাঁরা লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য এসিসিএ বেছে নিতে পারেন।
পড়ালেখার নিয়মকানুন
উচ্চমাধ্যমিক বা এ লেভেল পাস করে এসিসিএ শেষ করতে হলে একজন শিক্ষার্থীকে ‘ফাউন্ডেশন ডিপ্লোমা’ দিয়ে শুরু করতে হয়। তারপর অ্যাপ্লাইড স্কিলস লেভেলে এসে একজন শিক্ষার্থী চাইলে স্নাতকের সনদ নিতে পারেন।
এই পর্যায়ে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড ব্রুকস ইউনিভার্সিটিতে একটি থিসিস এবং আইইএলটিএস স্কোর জমা দিলে, যাচাই–বাছাইয়ের পর এই বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতকের সনদ দিয়ে থাকে। পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হতে পারে দেশে বসেই। অনলাইনের মাধ্যমে অক্সফোর্ড ব্রুকস ইউনিভার্সিটির সঙ্গে যোগাযোগ করতে হয়।
সে ক্ষেত্রে একজন শিক্ষার্থী ‘অ্যাপ্লাইড অ্যাকাউন্টিং গ্র্যাজুয়েট’ হিসেবে বিবেচিত হবেন। এই ধাপ পেরোনোর পর আসে কর্মক্ষেত্রে কাজের অভিজ্ঞতা নেওয়ার পালা।
অধিকাংশ শিক্ষার্থী তখন তাঁর কর্মক্ষেত্র বেছে নেন। হাতে-কলমে এই অভিজ্ঞতা জরুরি বলেই এসিসিএকে পেশাগত দক্ষতার সনদ বলা হয়। সব শেষ ধাপটিকে বলা হয় ‘স্ট্র্যাটেজিক প্রফেশনাল’। এই ধাপের জন্য মোট পাঁচটি ‘প্রফেশনাল পেপার’ শেষ করতে হয়। সঙ্গে দরকার হয় ৩৬ মাস, অর্থাৎ ৩ বছর কাজের অভিজ্ঞতা।
ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের সঙ্গে যোগাযোগ করে এই পর্যায়ে এসে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিও নেওয়া যায়। পুরো প্রক্রিয়ায় বেশির ভাগ পরীক্ষাই সম্পন্ন হয় অনলাইনে, এসিসিএর ‘এক্সাম পার্টনার’ ব্রিটিশ কাউন্সিলের তত্ত্বাবধানে।
চাইলে কোনো শিক্ষার্থী ঘরে বসেই প্রস্তুতি নিয়ে, এসিসিএ বাংলাদেশের মাধ্যমে নাম নিবন্ধন করে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেন। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতির সুবিধার্থে আছে ‘এসিসিএ প্রফেশনাল ইনসাইটস’ নামের একটি অ্যাপ। এই অ্যাপ থেকেও ছাত্রছাত্রীরা বিভিন্ন সহায়তা পাবেন।